ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘাতে পাকিস্তানের সেনা বাহিনীর প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে। দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ভারতের পরিচালিত হামলায় আরও দুই সেনাসদস্য আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন থেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। ফলে সাম্প্রতিক সহিংসতায় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা আরও বেড়েছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৬ থেকে ৭ মে মধ্যরাতে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী বিনা উসকানিতে একপাক্ষিকভাবে ছয়টি আলাদা স্থানে হামলা চালায়। হামলার লক্ষ্য ছিল নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ নিরীহ বেসামরিক জনগণ। এসব হামলাকে ‘নির্লজ্জ’ এবং ‘কাপুরুষোচিত’ বলে আখ্যায়িত করেছে আইএসপিআর।
বিবৃতিতে বলা হয়, হামলার সময় সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মধ্যেই আরও দুই সেনাসদস্য—হাবিলদার মোহাম্মদ নবীদ ও বিমানবাহিনীর সিনিয়র টেকনিশিয়ান মোহাম্মদ আয়াজ—গুরুতর আহত হন এবং পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। তাদের এই আত্মত্যাগ পাকিস্তানের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করেছে আইএসপিআর।
সাম্প্রতিক এই সহিংসতায় আহত হয়েছেন আরও ৭৮ জন পাকিস্তানি সেনা। পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ নিচ্ছে, যা দুই প্রতিবেশী পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির শঙ্কা জোরালো করেছে।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে শহীদদের বীরত্ব ও দায়িত্ববোধের প্রশংসা করে বলা হয়, মাতৃভূমির জন্য তাঁদের আত্মত্যাগ জাতির জন্য চিরন্তন প্রেরণা হয়ে থাকবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তাঁদের ত্যাগ হবে দেশপ্রেম ও সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত।
এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করছে। দক্ষিণ এশিয়ায় এমন সংঘর্ষপূর্ণ আবহ গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।
উল্লেখ্য, ভারতের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে সীমান্ত অঞ্চলে চলমান এই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এমন এক সময়ে এ ঘটনা ঘটল, যখন দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ইতিমধ্যে তলানিতে। বর্তমান পরিস্থিতি কী মোড় নেয়, সেটি নির্ভর করছে পরবর্তী রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের ওপর।