ঢাকাই চলচ্চিত্রে প্রেক্ষাগৃহ থেকে ন্যায্য অর্থ বণ্টন বা হিস্যার দাবিতে একাট্টা হয়েছেন প্রযোজকেরা। ঈদের বড় বাজারকে সামনে রেখে সিনেমা মুক্তির প্রস্তুতির পাশাপাশি তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে শুরু করেছেন।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২ এর একটি রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত হয় এক বৈঠক। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা চলচ্চিত্রগুলোর নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী ও প্রযোজকেরা। বৈঠকের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা হয় বিকেলে।
প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল বৈঠক শেষে বলেন, প্রেক্ষাগৃহের টিকিট বিক্রি থেকে ন্যায্য হিস্যা আদায়ে তাঁরা একত্রে কাজ করবেন। তিনি আরও জানান, এই আলোচনার মাধ্যমে প্রযোজকদের ন্যায্য পাওনা নিশ্চিত করতেই মূলত বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল।
সম্প্রতি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রেক্ষাগৃহগুলো থেকে এসি রক্ষণাবেক্ষণের নামে অতিরিক্ত অর্থ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই প্রসঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়া প্রযোজকেরা জানান, এমন ‘অন্যায্য বিল’-এর কারণে তারা প্রকৃত হিস্যার অর্থ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিষয়টি সামনে আসার পর প্রযোজকেরা নতুন করে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নেন।
বৈঠকে প্রযোজকেরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, এসি রক্ষণাবেক্ষণের খরচ যৌক্তিক সীমায় আনতে হবে। একই সঙ্গে তারা টিকিট বিক্রির অর্থের ন্যায্য বণ্টন দাবি করেন। তাঁদের মতে, মাল্টিপ্লেক্স কিংবা একক প্রেক্ষাগৃহ যেখানেই হোক, প্রযোজকের পাওনা নিশ্চিত করা না গেলে চলচ্চিত্র শিল্পের টিকে থাকাটাই কঠিন হয়ে পড়বে।
শাহরিয়ার শাকিল জানান, তাঁরা খুব শিগগিরই হল মালিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান। এই আলোচনা হবে খোলামেলা ও সমঝোতার ভিত্তিতে, যাতে উভয়পক্ষের স্বার্থ বজায় থাকে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্মাতা রেদওয়ান রনি, শিহাব শাহীন, রায়হান রাফী, সঞ্জয় সমদ্দার, শরাফ আহমেদ জীবন, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকে। ছিলেন অভিনয়শিল্পী নুসরাত ইমরোজ তিশাও।
প্রযোজকদের দাবি, যারা চলচ্চিত্রে বিনিয়োগ করছেন, তাদের টিকে থাকা না গেলে পুরো ইন্ডাস্ট্রিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই প্রদর্শক এবং প্রযোজকের মধ্যকার বণ্টনের কাঠামোকে আরও স্বচ্ছ, ন্যায্য ও বাস্তবভিত্তিক করতে হবে।
এই ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগের মাধ্যমে ঢাকাই চলচ্চিত্রে এক নতুন আলোচনার দিগন্ত উন্মোচিত হলো, যেখানে প্রযোজক, নির্মাতা ও শিল্পীরা সবাই মিলে ভবিষ্যতের টেকসই চলচ্চিত্র ইকোসিস্টেম গঠনের পথে এগিয়ে যেতে চাচ্ছেন।