সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তর একীভূত করে প্রতি ১০ শলাকার প্যাকেটের সর্বনিম্ন দাম ৯০ টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে ডর্প যুব ফোরাম। আসন্ন ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে তামাকপণ্যের দাম ও কর বৃদ্ধি এবং করনীতি সংস্কারের আহ্বান জানিয়ে এই সংগঠনটি বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে।
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশে সিগারেটের সহজলভ্যতা ও সস্তা মূল্য তরুণদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা বাড়িয়ে তুলছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ১৮ শতাংশ তরুণ ও প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান করেন। যার ফলে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ তামাকজনিত রোগে মারা যাচ্ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমন বলেন, “বর্তমানে বাজারে চারটি স্তরের সিগারেট পাওয়া যায়। এর মধ্যে নিম্ন ও মধ্যম স্তরের বিক্রি সবচেয়ে বেশি। এই দুই স্তরের সিগারেটই বাজার দখল করে রেখেছে। তাই এই দুই স্তর একীভূত করে সর্বনিম্ন দাম ৯০ টাকা নির্ধারণ করা হলে তরুণদের ধূমপান শুরু করার প্রবণতা অনেকটাই কমে যাবে।”
এ সময় যুব প্রতিনিধি সিন্থিয়া বলেন, “আমাদের দাবি বাস্তবায়ন হলে অন্তত ১৭ লাখ তরুণ তামাকের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাবে। অকাল মৃত্যু উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। পাশাপাশি সরকার প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব অর্জন করতে পারবে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪৩ শতাংশ বেশি।”
ডর্প তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রতিনিধি ডা. সিলভানা ইশরাত বলেন, “২০১৬ সালের তুলনায় মানুষের গড় আয় দ্বিগুণ হয়েছে, মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে, কিন্তু নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম সে হারে বাড়েনি। ফলে এই পণ্য আরও সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। করনীতি সংস্কার ছাড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।”
মানববন্ধন থেকে সরকারকে আহ্বান জানানো হয়, আসন্ন বাজেটে সিগারেটের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে একটি শক্তিশালী ও জনস্বাস্থ্যবান্ধব তামাক করনীতি গড়ে তোলার জন্য। তরুণদের কণ্ঠস্বরকে গুরুত্ব দিয়ে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি তামাকমুক্ত, সুস্থ ও টেকসই বাংলাদেশ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায় ডর্প যুব ফোরাম।