সপরিবারে ইসলাম গ্রহণ করলেন বিজিবি সদস্য, নতুন জীবনের পথে আবু সুফিয়ান

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক সদস্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। পঞ্চগড় ব্যাটালিয়নে (১৮ বিজিবি) কর্মরত এই সদস্যের নাম ছিল সুরাঞ্জন কুমার। ধর্মান্তরের পর তিনি এখন মো. আবু সুফিয়ান নামে পরিচিত।

ইসলামের একত্ববাদ এবং আধ্যাত্মিক শিক্ষা তাকে ও তার পরিবারকে আকৃষ্ট করেছে বলে জানা গেছে। স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস, নবী করিম হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শ ও ইসলামের মানবতাবাদী শিক্ষা তাদের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে।


পরিবারসহ নতুন পরিচয়
সিপাহী আবু সুফিয়ান একা নন, তার স্ত্রী ও সন্তানরাও একইসঙ্গে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তার স্ত্রী রূপা রানী দাস এখন মোছা. সামিয়া জান্নাত নামে পরিচিত। তাদের কন্যা উষসী রানী দাস হয়েছেন মোছা. সাবিহা সুলতানা এবং ছেলে সায়ান দাস এখন মো. আবু সানাফ নামে পরিচিত।

ধর্মান্তরিত এই পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা কোনো প্ররোচনায় নয়, বরং সুস্থ বিবেক ও মন থেকে নিজ ইচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছেন।


আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণে ধর্ম গ্রহণ
এই পরিবার ২০২৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথমে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে প্রবেশ করেন। এরপর ২৪ অক্টোবর তারা পঞ্চগড়ের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে এফিডেভিট করেন।

সবকিছু সম্পূর্ণভাবে আইনগত পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়েছে, যা তাদের সিদ্ধান্তের গুরুত্ব এবং সচেতনতার প্রতিফলন।


আন্তরিক বিশ্বাস ও অনুভূতির প্রকাশ
ইসলাম গ্রহণের পর আবু সুফিয়ান বলেন, “ইসলাম ধর্মে সৃষ্টিকর্তা এক ও অদ্বিতীয়। আল্লাহ তায়ালাই সমগ্র জগতের একমাত্র মালিক।”

তার স্ত্রী সামিয়া জান্নাত বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, আল্লাহ নিরাকার ও অবিনশ্বর। হযরত মোহাম্মদ (সা.) হলেন সর্বশেষ নবী ও রাসুল। আমরা কোনো চাপ বা প্ররোচনায় নয়, বরং চিন্তাভাবনা করে সজ্ঞানে ইসলাম গ্রহণ করেছি।”


একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা
ধর্মান্তরের মাধ্যমে বিজিবি সদস্য আবু সুফিয়ান ও তার পরিবার এক নতুন জীবনের যাত্রা শুরু করেছেন। তাদের এই সিদ্ধান্ত সমাজে যেমন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, তেমনি ইসলাম ধর্মের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও অনুসন্ধিৎসাও তুলে ধরেছে।

এই ধরনের ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, বিশ্বাস ও আস্থার পরিবর্তন হতে পারে গভীর আত্মিক উপলব্ধি এবং নিজস্ব সিদ্ধান্তের ফসল। ইসলামের শান্তির বার্তা ও মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি যে আজও মানুষের অন্তরে আলো জ্বালাতে সক্ষম — এই পরিবার তার একটি প্রমাণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *