ভোক্তা অধিকারের জব্বারকে ‘মারধর’, ছড়িয়ে পড়া ভিডিও কি আসল?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনার ঝড়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ব্যস্ত একটি সড়কে কয়েকজন লোক মিলে এক ব্যক্তিকে মারধর করছে, যিনি দেখতে অনেকটা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডলের মতো। এই ভিডিও সামনে আসার পর অনেকেই ধরে নেন, ঘটনাটি সত্য এবং মারধরের শিকার ব্যক্তিটি সরকারি এই কর্মকর্তা।

তবে ঘটনাটিকে স্রেফ ‘গুজব’ ও ‘ভুয়া’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন খোদ মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল নিজেই। বুধবার বেলা ১১টার দিকে গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি জানান, তার সঙ্গে এমন কোনো ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি সুস্থ ও নিরাপদ রয়েছেন।

ভোক্তা অধিকারের এই কর্মকর্তা বলেন, “ভিডিওটি সম্পূর্ণ ভুয়া। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হয়েছে। আমার নাম ও চেহারার সঙ্গে মিল খুঁজে এমন বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।”

এর আগে এই কর্মকর্তা ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ তৈরি করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছিলেন। চলতি বছরের ১ মার্চ রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দায়ের করা সেই জিডিতে উল্লেখ করা হয়, সামাজিক মাধ্যমে তাঁর নাম ব্যবহার করে ভুয়া আইডি খোলা হয়েছে এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে ভুয়া তথ্য বা ভিডিও ছড়ানোর প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কারো চেহারার মিলকে ভিত্তি করেই তৈরি করা হয় বিভ্রান্তিকর প্রচার। এতে শুধু ব্যক্তি মানহানি নয়, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন মিথ্যা প্রচারের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের আরও সক্রিয় হওয়া জরুরি। একইসঙ্গে সাধারণ ব্যবহারকারীদেরও উচিত—যাচাই না করে কোনো ভিডিও বা খবর শেয়ার না করা। গুজব ঠেকাতে গণমাধ্যম ও জনগণের দায়িত্বশীল আচরণ সময়ের দাবি।

এই ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে যে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছিল, তা কিছুটা হলেও স্পষ্ট হয়েছে। ভিডিওটি ভুয়া এবং পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডলের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই—এ তথ্য নিশ্চিত হওয়ায় বিভ্রান্তি কাটছে সাধারণ মানুষের মাঝেও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *