বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মালয়েশিয়া। দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী এক বৈঠকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ হবে কর্মী গ্রহণে সর্বোচ্চ গুরুত্বপ্রাপ্ত দেশ। এই বার্তা দেশের জন্য একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত এবং বিদেশে কাজ করতে ইচ্ছুক লাখো মানুষের জন্য আশার আলো।
সাম্প্রতিক সময়ে একটি প্রতিনিধিদল মালয়েশিয়া সফর করে, যেখানে তিনজন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে প্রতিনিধি দলের একজন সদস্য জানান, প্রথম ধাপে প্রায় আট হাজার বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু হবে।
বৈঠকে মালয়েশিয়ার প্রতি আহ্বান জানানো হয়, যেন বাংলাদেশ থেকে সব রিক্রুটিং এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর সুযোগ দেওয়া হয়। বিষয়টি তারা ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরও প্রস্তাব রাখা হয়, যেন কেবল সাধারণ শ্রমিকই নয়, নিরাপত্তাকর্মী, নার্স ও কেয়ারগিভারের মতো দক্ষ পেশাজীবীদেরও মালয়েশিয়া কর্মসংস্থানের সুযোগ দেয়। এই প্রসঙ্গে মালয়েশিয়ার উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান, তাদের শ্রমবাজারে এসব পেশাজীবীদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।
এছাড়া আলোচনা হয়েছে বাংলাদেশের কর্মীদের বর্তমান ভিসা ব্যবস্থাপনা নিয়েও। সাধারণত বাংলাদেশি শ্রমিকদের সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা দেওয়া হয়, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় সীমিত সুযোগ তৈরি করে। মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় ছিল অবৈধ হয়ে যাওয়া শ্রমিকদের বৈধতা ফেরানোর সুযোগ। যদিও নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে এমন সুযোগ সাধারণত দেওয়া হয় না, তবে নিয়োগদাতাদের কারণে অনেক সময় ভিসা নবায়নে সমস্যা হয়—এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ভবিষ্যতে মানবিক দিক বিবেচনায় নতুন সিদ্ধান্তের সম্ভাবনার কথাও উঠে আসে।
এই সফর এবং আলোচনা প্রমাণ করে, আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী হচ্ছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সক্রিয়তা ও পরিকল্পনার ফলে দেশের মানুষের বিদেশে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার পথ আরও প্রশস্ত হচ্ছে। যারা মালয়েশিয়ায় কাজ করতে আগ্রহী, তাদের জন্য সামনে অপেক্ষা করছে বাস্তব সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত।