বাংলাদেশের মুদ্রানীতি পরিচালনায় বড় এক পরিবর্তনের ঘোষণা এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, দেশের ডলারের বিনিময় হার শিগগিরই বাজারভিত্তিক করা হবে। তবে তিনি আশ্বস্ত করেছেন, এতে ডলারের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
গভর্নর জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে রপ্তানি আয় এবং প্রবাসী আয়ের উচ্চ প্রবাহ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহকে স্থিতিশীল রেখেছে। এর ফলে বাজারে ডলারের অতিরিক্ত চাহিদা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা নেই, যা মুদ্রার মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।
তিনি আজ এক ভার্চুয়াল সভায় যুক্ত হয়ে এই ঘোষণা দেন। সভাটি আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। মূল বক্তব্যে গভর্নর বলেন, বাজারভিত্তিক হার মানে এই নয় যে, ডলারের দাম খোলা বাজারে যা ইচ্ছা তাই হবে। বরং এটি একটি নিয়ন্ত্রিত বাজার কাঠামোর মধ্যেই পরিচালিত হবে, যেখানে বিনিময় হার থাকবে বর্তমান রেটের কাছাকাছি।
এই নতুন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে আগামী জুন মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর দুটি কিস্তি পাওয়া যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন গভর্নর। মুদ্রানীতির এই সংস্কার আন্তর্জাতিক অংশীদারদের আস্থাও বৃদ্ধি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাজারভিত্তিক রেট চালু হলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ডলারের লেনদেনে কিছুটা স্বাধীনতা পাবে, ফলে বাজারে স্বাভাবিক ভারসাম্য বজায় থাকবে। একইসঙ্গে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় অব্যাহত থাকলে টাকার ওপর চাপ কমবে এবং সামষ্টিক অর্থনীতিও স্থিতিশীল থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ঘোষণা অর্থনীতি বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক বাস্তবতায় দেশের লেনদেন কাঠামোকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে।
এই পদক্ষেপের ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, পাশাপাশি বিনিয়োগ ও আমদানি খাতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার আশা করা হচ্ছে।