কোন পশু কত বছর বয়সে কোরবানি দেওয়া যাবে

ঈদুল আজহার সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, কোরবানির পশু কেনাবেচা নিয়েও মানুষের ব্যস্ততা ততই বাড়ছে। কোরবানির হাটে যাওয়ার আগেই জেনে রাখা জরুরি—কোন বয়সের পশু কোরবানির জন্য শরিয়তসম্মত। কেননা, বয়সের সীমা পূর্ণ না হলে সেই পশু দিয়ে কোরবানি করা সহিহ হবে না।

ইসলামী শরিয়তের নির্দেশনা অনুযায়ী, কোরবানির জন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি চতুষ্পদ প্রাণী বৈধ বলে গণ্য হয়েছে। এগুলো হলো—উট, গরু বা মহিষ, এবং ছাগল বা ভেড়া বা দুম্বা। তবে প্রতিটি প্রাণীর জন্যই নির্ধারিত বয়স পূর্ণ হওয়া আবশ্যক।

উটের ক্ষেত্রে বয়স হতে হবে কমপক্ষে পাঁচ বছর। গরু ও মহিষের ক্ষেত্রে নির্ধারিত বয়স হলো দুই বছর। আর ছাগল ও ভেড়ার বয়স হতে হবে এক বছর পূর্ণ। তবে ব্যতিক্রম রয়েছে ভেড়া ও দুম্বার ক্ষেত্রে। যদি এক বছর পূর্ণ না হয়, কিন্তু বয়সের বেশির ভাগ সময় অতিবাহিত হয় এবং বাহ্যিকভাবে দেখতে এক বছরের মতো পরিপূর্ণ লাগে—তাহলে তা কোরবানির জন্য গ্রহণযোগ্য। তবে ছাগলের ক্ষেত্রে এমন ছাড় নেই। এক বছরের কম বয়সী ছাগল দ্বারা কোরবানি বৈধ নয়।

হাদিস শরীফে এ বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা এসেছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) এর বর্ণনা অনুযায়ী, কোরবানির পশুর ন্যূনতম বয়স সম্পর্কে এই সীমাগুলো মানা উচিত—উট পাঁচ বছর, গরু ও মহিষ দুই বছর, এবং ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা এক বছর। (মুয়াত্তা মালেক, হাদিস: ৭৫৪)

কোরবানির পশু নির্বাচনের সময় শুধু বাহ্যিক চেহারা নয়, বরং তার বয়স যাচাই করাও জরুরি। অনেক সময় হাটে কিছু পশু বাহ্যিকভাবে বড় মনে হলেও বয়স কম থাকায় তা শরিয়ত অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয়।

আল্লাহ তাআলা বলেন, “আমি সব জাতির জন্য কোরবানির বিধান রেখেছি, যেন আমি তাদের জীবিকা হিসেবে যে চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছি তাতে (জবাই করার সময়) আল্লাহর নাম স্মরণ করে।” — (সুরা হজ, আয়াত : ৩৪)

অতএব, কোরবানির পূর্বে পশুর বৈধতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং শরিয়তের নিয়ম অনুসারে সঠিক বয়সের পশু নির্বাচন করা প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব। কেবলমাত্র বয়সসহ পশু নির্বাচনই নয়, তার সুস্থতা, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সম্পূর্ণতা এবং কোরবানির উদ্দেশ্যে প্রস্তুতির প্রতিটি ধাপেও থাকা চাই যত্ন ও সতর্কতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *