ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ব্যাটারি চালিত অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। সেই অভিযানের অংশ হিসেবে সম্প্রতি তিনটি রিকশা ভাঙার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত চালকদের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মূল সড়কে রিকশা না চালাতে সতর্ক বার্তা দিতেই এসব রিকশা ভাঙা হয়। তবে ক্ষতিগ্রস্ত চালকদের আয়ের বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
অভিযানটি পরিচালিত হয় রাজধানীর আসাদগেট এলাকায়, যেখানে ডিএনসিসি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০০টির বেশি ব্যাটারি চালিত রিকশা জব্দ করে। মূল সড়কে এসব রিকশার অনিয়ন্ত্রিত চলাচলকে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
প্রশাসক এজাজ জানান, এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে রাজধানীর প্রায় ২০ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী এই ব্যাটারি চালিত রিকশাগুলো। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই যানবাহনগুলো কোনো নীতিমালা অনুসরণ না করেই নির্মিত হচ্ছে এবং নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলাচল করছে।
ব্যাটারি চালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণে আনা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার আরও কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। ইতোমধ্যে বুয়েটের সহায়তায় নিরাপদ রিকশার একটি মানসম্পন্ন নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং কিছু কোম্পানিকে সেগুলো উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ডিএনসিসি ঘোষণা দিয়েছে, চলতি মাসের মধ্যেই রিকশাচালকদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও উত্তীর্ণ চালকরাই বৈধভাবে নির্ধারিত এলাকায় অনুমোদিত রিকশা চালাতে পারবে। নির্ধারিত এলাকার বাইরে কোনো রিকশা চলতে পারবে না। যাত্রী ভোগান্তি কমাতে নির্দিষ্ট ভাড়াও নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
প্রশাসক আরও জানান, একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে শুধুমাত্র একটি রিকশা লাইসেন্স দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে চলমান রিকশা বাণিজ্য বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই অভিযানে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ডিএমপির কর্মকর্তা এবং ডিএনসিসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সরকারি এই উদ্যোগ রাজধানীর যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, নিরাপদ রিকশা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পথচারী ও যাত্রীদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে।